সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১২

পুরানো ঢাকার বিউটি লাচ্ছি ফালুদা


পুরানো ঢাকার বিউটি লাচ্ছি ফালুদা

লিখেছেন বাবুয়া, রাত ১০: ১২, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১১

পুরানো ঢাকার বিউটি লাচ্ছি ফালুদা
http://media.somewhereinblog.net/images/thumbs/onujibblog_1228409421_1-beauty_faluda.JPG
এই গ্রীষ্মের তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষদের কাছে ঠাণ্ডা শরবত অত্যন্ত আকর্ষণীয় এক পানীয়। সুশীতল এক গ্লাস শরবত সহজেই শরীরের ক্লান্তি দূর করতে পারে। গরমে এই শরবতকে কেন্দ্র করে বেশকিছু অস্থায়ী শরবত দোকানও গড়ে ওঠে ঢাকায়। তবে দীর্ঘ সময় ধরে শুধু শরবতকে কেন্দ্র করে একটি দোকানের টিকে থাকাটা সত্যিই বিস্ময়কর ব্যাপার। আর এই কাজটি প্রায় ৭৭ বছর ধরে করে যাচ্ছে ৩০/১ জনসন রোড, রায় সাহেব বাজারের ‘বিউটি লাচ্ছি ফালুদা’। দোকানের নামে "ফালুদা" ট্রেড মার্ক করা থাকলেও দোকনটি কিন্তু শরবতের জন্যই বিখ্যাত!৭৫ বছর পুর্বে দোকানটি শুরু করেছিলেন আব্দুল আজিজ নামে একজন আদি ঢাকাবাসী। যিনি এলাকায় "কুট্টি আজিজ" নামেই পরিচিত ছিলেন। এখন এই ব্যবসাটি পরিচালনা করছেন তাঁর নাতি হাজী মোহাম্মদ জাবেদ। তিন প্রজন্মের এই শরবতের ব্যবসায় প্রথমদিকে তাঁরা শুধু লাচ্ছি, বিট লবণ লাচ্ছি আর লেবু শরবত বিক্রি করতেন। যদিও গত দশ বছর ধরে এই দোকানে যোগ হয়েছে ফালুদা বিক্রি-অথচ সেই ৭৫ বছর আগে থেকেই দোকানের নামের সাথে "ফালুদা" শব্দটি জড়িত! গরমের সময় মূলতঃ ফালুদা আর লাচ্ছিই বেশি চলে এখানে। এই দোকানের সরবরাহ/পরিবেশন করা আইটেমগুলো হচ্ছেঃ-‘বিউটি লাচ্ছি ফালুদা’ ফালুদা, লাচ্ছি, বিট লবণ লাচ্ছি, লেবু শরবত(ওরা বলে নেম্বু শরবত)হলেও শীতের সময় এরা বিশেষ আলু পুরি,গরুর মাংসের ঝোলের দু’টি আইটেমও করে থাকে। দুই/আড়াই মাস বিক্রি করা এগুলোর দাম আলু পুরি ২ টাকা,গরু মাংসের ঝোল ২০ টাকা।
http://prothom-aloblog.com/img/uploads/3ce1c6be282d3f647fce58164636c761.jpg
এই দোকানে ২০ বছর ধরে কর্মরত জাকির হোসেন জানালেন,৫০ টাকা দামের এই ফালুদাতে দেওয়া হয় কলা,ডালিম,কিসমিস,আপেল, খোরমা,খেজুর,আঙুর,পেস্তা বাদাম-এর মতো ফল-ফলাদি। এসব ছাড়াও আরো থাকে সাগুদানা,দুধ,মালাই,নুডুলস(এটা নিজের তৈরি)।ফালুদা পার্সেল করে বাসায় নেবার ব্যবস্থাও এখানে রয়েছে। সর্বনিম্ন ৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত পার্সেল এখানে পাওয়া যায়।

শুধু পার্সেলই নয় বিভিন্ন অর্ডারও নিয়ে থাকে এ প্রতিষ্ঠান। 

একদিন আগে অগ্রিম টাকা দিলে তারা বিভিন্ন বনভোজন বা ঘরোয়া অনুষ্ঠানেও অংশ নিয়ে থাকে।

শুধু দই, চিনি দিয়ে করা লাচ্ছির দাম ২৫ টাকা। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রয়েছে বিশেষভাবে তৈরি বিট লবণ লাচ্ছি। এটা খেতে কিছুটা টক লাগবে। দাম একই;২৫ টাকা। লেবুর শরবত ১৫ টাকা? একটু বেশিই মনে হতে পারে কিন্তু চিনির সিরা ব্যবহার করে তৈরি করা এই শরবতে খরচ একটু বেশিই পড়ে। ‘বিউটি লাচ্ছি ফালুদা’ তাদের শরবতের উপকরণগুলো দিনেরটা দিনেই ব্যবহার করে থাকে। 

ফলে ক্রেতারা সবসময়ই টাটকা জিনিসই পেয়ে থাকেন। পুরনো ঢাকার অন্যতম পুরনো শরবতের দোকানটি প্রতিদিন এমনকি ঈদের দিনও সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে। যারা ঐ এলাকায় যাবেন তাঁরা একবার চেখে দেখতে পারেন-ভালোই লাগবে আশা করি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন