সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১২

ভজন কুমার সরকার এর ভোজন বিলাশঃ


ভজন কুমার সরকার এর ভোজন বিলাশঃ

লিখেছেন বাবুয়া, দুপুর ০২: ৪৩, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১১

ভজন কুমার সরকার এর ভোজন বিলাশঃ 
http://scrapetv.com/News/Images/fat%20guy%20eating%20giant%20hamburger.jpg
মফস্বল সংবাদঃ নামে বেশীর ভাগ দৈনিক পত্রিকায় একটি ফিচার থাকে। সপ্তাহে এক দিন/দুই দিন সেই পাতায় মফস্বলের বিভিন্ন সংবাদ ছাপা হয়-যেগুলো অনেকটাই বাসি সংবাদ। ঐ সংবাদ কেউ খুব একটা গুরুত্ব সহকারে পড়েননা। আমি সময়পেলে খবরের কাগজের প্রায় সব কিছুই পড়ি।কারন, আমার সবকিছুই খুঁতিয়ে পড়ার অভ্যাস। কয়েকদিন আগে একটা দৈনিক কাগজে পড়লাম-পাবনা জেলার ফরিদপুর উপজেলায় উপজেলা সদরের সোনালী ব্যাংকে ২০০ শত লোক বয়স্ক ভাতা নিতে এসে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মিঃ ভজন কুমার সরকারকে ১০০ টাকা করে দিতে বাধ্য হয়েছেন-দরিদ্র অসহায় বয়স্ক মানুষগুলো। 

সংবাদটি পড়ার পর থেকেই বিশয়টা ব্লগে সকলের সাথে শেয়ার করার জন্য কিছু লিখতে মন চাইছিল। বয়স্ক ভাতা প্রধানত তারাই পান-যারা বয়সের ভারে ন্যুজ্জ। কর্ম হীন, আয়হীন এবং সহায় সম্বলহীন। প্রতিটি উপজেলায় সর্বচ্চ তেমন ২০০ লোক বয়স্ক ভাতা পান এক কালীন ২৪০০ টাকা করে। সরকারী ব্যাংক হিসেবে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমেই সেই টাকা নির্দিস্ট বয়স্কদের মাঝে বিতরণের নিয়ম। চলতি মাসে ১০ তারিখে পাবনা জেলার ফরিদপুর উপজেলায় উপজেলা সদরের প্রত্যন্ত গ্রামের ২০০ জন বয়স্ক মানুষ তাদের ভাতা তুলতে সোনালী ব্যাংকে যান। 

লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বয়স্ক জনেরা। টাকা দেয়া শুরু হলো। টিপ-সই দিয়ে টাকা হাতে নিয়ে গুনে দেখেন ২৪০০ টাকা নয়, প্রতি জনকে দেয়া হচ্ছে-২৩০০ টাকা করে। কিন্তু টিপ-সই দিতে হচ্ছে “২৪০০ টাকা বুঝিয়া পাইলাম” মর্মে! বয়স্ক ভাতা গৃহীতারা জানতে চাইলেন-কেন ১০০ টাকা কম দেয়া হচ্ছে? সোনালী ব্যাংকের কর্ম কর্তা মিঃ ভজন কুমার সরকার জানালেন-প্রতি জন দুস্থ্য তাদের ২৪০০ টাকা থেকে মাত্র ১০০ টাকা তাকে খুশী হয়ে "চা-পানি" খাবারের জন্য দিয়েছেন! অসহায় জীণ শীর্ণ বয়স্ক মানুষের প্রতিবাদের ভাষা নিজ শরীর থেকেও খুব বেশী দুর্বল। তাই প্রতি জন বয়স্কের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নিয়ে মিঃ ভজন কুমার সরকার ভোজন করেছেন!

এই সংবাদটি প্রেরণকারী সেই মফস্বল সংবাদ দাতাকে অনেক ছালাম এবং ধন্যবাদ জানাই। অভিনন্দন(!) জানাই মিঃ ভজন কুমারের পিতা-মাতাকে তাঁদের দুরদৃস্টির প্রশংসা করে।কারন তার পিতা-মাতা তাদের সুপুত্রের জন্য এমন একটি অর্থবহ এবং স্বার্থক নাম রেখেছিলেন বলে। অভিনন্দন জানাই মিঃ ভজন কুমার সরকারকে। কারন, তিনি তার বাবা-মায়ের দেয়া নাম স্বার্থক করেছেন দুস্থ্য অসহায় বয়স্ক ২০০ জনের কাছ থেকে মাত্র ১০০ টাকা করে নিজের ভোজনের জন্য রেখে দিয়ে! 

(উল্লেখ্য যে-গত বছরও মিঃ ভোজন কুমার সকার বয়স্ক-দুস্থ্যদের ভাতা থেকে জন প্রতি ৫০ টাকা কম দিয়েছিলেন)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন