সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১২

ব্যাস্ত শহরে অন্যরকম বেড়ানোঃ


ব্যাস্ত শহরে অন্যরকম বেড়ানোঃ

লিখেছেন বাবুয়া, রাত ০৮: ০৪, ০৭ অক্টাবর, ২০১১

ব্যাস্ত শহরে অন্যরকম বেড়ানোঃ

এই শহরে একটু ভিন্নমাত্রার অবসর যাপনের স্থান খুঁজে পাওয়া খুবই দুষ্কর। একটুখানি নিরবতা আর একটু নির্জনতা খোঁজার প্রত্যাশা শহরতলীগুলোতে তৈরি হচ্ছে নানা আয়োজন। গতকাল ঢাকা শহর তুলনামূলক কিছুটা ফাঁকা থাকায় স্বপরিবারের বেড় হয়েছিলাম উদ্দেশ্যহীন বেড়াতে। চলে যাই তুরাগ-আশুলিয়া এলাকায়। তারই একচিলতে বিবরণ আপনাদের সাথে শেয়ার করছি-

দূর থেকে দেখে মনে হবে যেন নদীর উপর বাঁশের তৈরি ছোট ছোট ঘর। উপরে টিনের তৈরি,চারপাশে অথৈ পানি,প্রচন্ড গড়মেও শীতল হাওয়ায় এক মনোরম পরিবেশ।

এই রকম একটি পরিবেশ দেখা যাবে মিরপুর চিড়িয়াখানার বিপরীতে এবং আশুলিয়া তুরাগ বেড়ীবাঁধ হয়ে সাভার যেতে। আশুলিয়া-তুরাগ পেরিয়ে গেলে মনে হবে এ যেন এক স্বপ্নীল পরিবেশ। নদীর উপর বাঁশের তৈরি ছোট ছোট ঘর। আসলে এই ঘরগুলোই ফাস্ট ফুড ও রেস্টুরেন্ট-একটা নয়, দুটো নয় প্রায় শ’খানেক। আপনি ইচ্ছে করলে স্বপরিবারে একটা ঘরই নিতে পারেন কয়েক ঘন্টার জন্য। সেখানে বসে প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে দেখা যাবে। দেখা যাবে ছোট বড় বর্ণীল নৌকা, লঞ্চ-বয়ে যাবে নির্মল হাওয়া। খাওয়া দাওয়ায় ঞেই কোনো সমস্যা-আপনার পছন্দের খাবার অর্ডার করিয়ে ওখানেই রান্না করে খেতে পারবেন স্বল্প পরিশরে। তাছাড়া বর্ষাকালে নৌকায় ঘোরার সুযোগও আছে। এখানে নৌকায় ১ ঘন্টায় ১০০/১৫০/২০০ টাকা নেয়। নৌকায় যারা ঘুরতে যাবেন তাদের যেন কোনো রকম অসুবিধা না হয় এর জন্য র‍্যাব ২ প্রতিদিন সকাল-দুপুর-বিকাল নদীতে টহল দেয়, আবার তীরেই রয়েছে র‍্যাব-পুলিশের টহল পার্টি। নৌকাগুলো ছাউনি যুক্ত তাই রোদ বৃস্টিতে সমস্যা নেই,দেখতেও সুন্দর।

ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খাবার। যেমন ফাস্টফুড হিসেবে রয়েছে র্বাগার,স্যান্ডুইচ,কাবাব,নান,নুডুলস,রোল,পরোটা ইত্যাদি। দুপুরের খাবার হিসেবে পাওয়া যাবে বিরানী,ঝালফ্রাই,তেহারী, খিচুরী, সাদা ভাত-মুরগী ইত্যাদি। এমনকি কয়েকটি বড় নৌকায় বারবিকিউ করার সুব্যাবস্থ্যা!

আমরা গিয়েছিলাম গাড়ি নিয়ে বেড়ী বাঁধ ধরে। অন্যদিকে মিরপুর চিড়িয়াখানা থেকে রিকশা যোগেও ওখানে যাওয়া যায়। রিকশায় যেতে ১৫-২০ টাকা ভাড়া লাগে। সেখানেও প্রায় ৮-১২ টি বিভিন্ন ধরনের রেস্টুরেন্ট ও ফাস্টফুড শপ রয়েছে। সে রকম কিছু ফাস্টফুড ও রেস্টুরেন্ট এর নাম- মায়াবী ফাস্টফুড,পুষ্প রেস্টুরেন্ট,অচিন বৃক্ষ ফাস্টফুড,ছায়ানীড় কফি ও ফাস্টফুড,নিরিবিলি রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি।

তবে সেখানে একমাত্র রেস্টুরেন্ট ও ফ্যামিলি পার্কটির নাম তামান্না রেস্টুরেন্ট ও ফ্যামিলি পার্ক। র্পাকটি সকাল ১০ থেকে সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। র্পাকটির ভিতরে ঢুকতে ১০টাকার টিকেট করতে হয়।

এর ভিতরে রয়েছে বাচ্চাদের জন্য ঘোড়া চড়ানো,দোলনা,চরকি ঘোরানো, ট্রেন,গাড়ি চালানো ইত্যাদি। এর ভিতর বসার জন্য রয়েছে সুন্দর মনোরম পরিবেশ। রয়েছে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট,একটি জামে মসজিদ যেখানে শুক্রবারে জুমার নামাজ পড়ানো হয়। ফ্যামিলি পার্কটির কর্তৃপক্ষ জানায়, একে আরও উন্নত করা হবে। বাচ্চাদের জন্য তৈরি করা হবে সুইমিংপুল। রেস্টুরেন্টগুলো বাঁশের তৈরি,নদীর উপর বলে বাইরে থেকে দেখতে খুব সুন্দর লাগে। তাছাড়া নদী,মাঝি,নৌকা,গাছপালা সে যেন এক অন্য রকম পরিবেশ। এ সকল রেষ্টরেন্টগুলোতে দুই পথে যাওয়া যায়। মিরপুর চিড়িয়াখানার রাস্তা দিয়ে অথবা উত্তরা,আব্দল্লাহপুর দিয়ে লেগুনা করে আসা যায়।

ঐপথে যদি বাস ব্যবস্থা চালু করা হয়,তবে মানুষের ভিড় বাড়বে। তাহলে পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়ানোর জন্য দর্শনার্থী অনেক বাড়বে। ব্যস্ততম নগরী ঢাকা। এখানে মানুষ প্রতিদিন ব্যস্ত থাকে তার নিজ নিজ কাজে। কেউ কারো দিকে তাকানোর সময় নেই। তাদের যেন বিশ্রামের সময় পর্যন্ত নেই। তবে মানুষ বিনোদন প্রিয়। তাই মানুষ শত ব্যস্ততার মাঝেও একটু বিনোদনের আশা করে। মানুষ তাই ছুটির দিনে বা একটু অবসর পেলে আত্মীয় স্বজন,পরিবার-পরিজন,বন্ধু-বান্ধব ও প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে ছুটে যেতে চায় নির্জনে,মুক্ত হাওয়া নিরিবিলি পরিবেশে। আশা করি এই রকম পরিবেশ নিশ্চয়ই আপনাদেরও ভালো লাগবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন